|| আতাউর রহমান ||
কাজী শামীম বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তিনি গত ২১ এপ্রিল ২০২৪খ্রি তারিখে ইউএনও পদে যোগদান করেছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে বদলী আদেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বিয়ানীবাজার উপজেলায় কর্মের মধ্য দিয়ে একজন মানবিক ও নিষ্ঠাবান অফিসার হিসেবে সমাদৃত হয়ে থাকবেন। কামনা করি, এই পথচলা আরও রঙিন ও সমৃদ্ধি লাভ করুক।
বিয়ানীবাজার উপজেলায় কর্মস্থলে তাঁর যোগদানের ১৩৬ তম কার্যদিবসে (৫ আগস্ট) আওয়ামী সরকারের পতন ঘটে। তৎপরবর্তী অন্তবর্তীকালিন সরকার আমলের আরও ৬৩ দিন শেষে তিনি বদলী আদেশ পেলেন। বিয়ানীবাজার উপজেলায় সর্বসাকুল্যে ১৯৯ কার্যদিবস শেষে নতুন কর্মস্থলের ঠিকানা সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলায়। চলতি সপ্তাহান্তে তিনি সেখানেও নির্বাহী অফিসার পদে যোগদান করার কথা রয়েছে।
গত ৬ নভেম্বর ২০২৪খ্রি. তারিখে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দিকী (এনডিসি) স্বাক্ষরিত সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে বর্তমান বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীম-কে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ইউএনও গোলাম মুস্তাফা মুন্না-কে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে যোগদানের আদেশ দেয়া হয়। বদলিকৃত উভয় ইউএনও ৩৫তম বিসিএস কর্মকর্তা। কাজী শামীম-এর বাড়ি কক্সবাজার জেলায় ও গোলাম মুস্তাফা মুন্না-এর বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায়।
বিয়ানীবাজার উপজেলায় কর্মকালীন কার্যক্রমে ইউএনও কাজী শামীম সাহেবকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। অন্তরবর্তীকালিন সরকারের সময়ে জনস্বার্থে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা, অর্থদণ্ড প্রদান ক্রেতাসাধারণকে স্বস্তি দিয়েছে। পৌর শহরের চলাচলের রাস্তা দখলমুক্ত হয়েছে। সিন্ডিকেট ভেঙে স্বাভাবিক অবস্থা আনার জন্য তাঁর আপ্রাণ চেষ্টা চোখে পড়ার মতো ছিল।
তাঁর যোগদানের পর বিয়ানীবাজার উপজেলায় লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া, কাজের গতিশীলতা ও সফলতার পেছনে কাজী শামীম এর অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। নাগরিক সেবা ও জন-নিরাপত্তায় প্রতিনিয়ত তার নির্দেশে বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হয়েছে। একজন মানবিক ও নিষ্ঠাবান অফিসার হিসেবে অসংখ্য নিদর্শন তৈরি করে তার অধীনস্থ অফিসারদের নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনপূর্ব বিয়ানীবাজার উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। বন্যার থাবায় মানুষের কাছে জনপ্রতিনিধিদের মতো তাঁর রাতদিন পরিশ্রম ও গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের সংবাদে ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষের বিজয়োল্লাসের বাঁধভাঙা স্রোতের কবলে উপজেলা প্রশাসন ভবন ও থানা ভবন নাশকতা ও লুটপাটের কবলে পড়ে। নিহত-আহতের ঘটনাও ঘটে। ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণও অনেক। এনিয়েও তদন্ত হয়েছে অনেক।
সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলার সাহসী পদক্ষেপের ধরণ দেখে মনে হয়েছে, ইউএনও কাজী শামীম নি:সন্দেহে একজন চৌকস, মেধাবী ও পরিশ্রমী অফিসার। তিনি উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্বে বিয়ানীবাজার পৌরসভার পৌর প্রশাসক, ৬৭টি মাধ্যমিক স্তরের স্কুল-মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে আসীন থেকে দিনভর বিরতিহীন দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছতা আনয়নের সংগ্রাম করেছেন। কাজী শামীম এর যোগদান পরবর্তী উপজেলার এসব স্বাভাবিক ও আকস্মিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে তাঁকে হিমসিম খেতে হয়েছে।