পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক : শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং ও ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রায় তিন মাস কমিটি বিহীন থাকায় নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সেই সমস্যা সমাধানে ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের) গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা, ২০২৪’ এর প্রবিধি ৬৪ এর আওতায় এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এমতাবস্থায়, যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত গভর্নিং বডি/ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যমান রয়েছে, সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইয়েদ এ.জেড. মোরশেদ আলী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে সংশ্লিষ্ট বোর্ডগুলোকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি, খ্যাতিমান সমাজসেবক, জনপ্রতিনিধি অথবা কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের মধ্য থেকে ৩ (তিন) জনের একটি তালিকাসহ অন্যান্য সদস্যদের মনোনয়ন গ্রহণপূর্বক সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের কাছে পাঠাবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা, ২০২৪’ এর প্রবিধি ৬৪ এর আওতায় এডহক কমিটি গঠনপূর্বক এ এডহক কমিটি কর্তৃক আগামী ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে নিয়মিত কমিটি গঠন করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডসমূহকে অনুরোধ করা হলো।
(১) কমিটিতে যেভাবে হবে:
(ক) সভাপতি – শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক মনোনীত;
(খ) শিক্ষক প্রতিনিধি – জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজন শিক্ষক;
(গ) অভিভাবক প্রতিনিধি – জেলা সদরের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কর্তৃক এবং উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক মনোনীত একজন অভিভাবক এবং
(ঘ) সদস্য-সচিব – শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান (পদাধিকার বলে)।
(২) অ্যাডহক কমিটি গঠনের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে এবং অনুমতি প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে কমিটি গঠনপূর্বক অনুমোদনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করতে হবে।
(৩) সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, মহানগরীর ক্ষেত্রে বিভাগীয় কমিশনার/ অন্যান্য ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের সহিত আলোচনাক্রমে, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি, খ্যাতিমান সমাজসেবক, জনপ্রতিনিধি অথবা কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীগণের মধ্য হইতে ৩ (তিন) জনের একটি তালিকাসহ অন্যান্য সদস্যের মনোনয়ন গ্রহণপূর্বক সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবেন।
(৪) শিক্ষা বোর্ড, সভাপতি মনোনয়নের জন্য প্রবিধান (৩) এর অধীন প্রস্তাবিত ৩ (তিন) জনের মধ্য থেকে একজনকে অথবা, পরিস্থিতি বিবেচনায়, ভিন্ন কোনো ব্যক্তিকে সভাপতি মনোনীত করতে পারেন এবং এডহক কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করিবে।
(৫) এডহক কমিটির মেয়াদ হবে এটি অনুমোদিত হওয়ার তারিখ থেকে ৬ মাস।
(৬) অ্যাডহক কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমত, ম্যানেজিং কমিটি গঠনে ব্যর্থ হলে, পুনরায় অ্যাডহক কমিটি গঠন করা যাবে, তবে তা ২ (দুই) বারের অধিক নয়।
(৭) অ্যাডহক কমিটি যৌক্তিক কারণ ব্যতিরেকে গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি গঠনে ব্যর্থ হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ব্যতীত উক্ত কমিটির সভাপতি ও সদস্যমণ্ডলী ন্যূনতম পরবর্তী ২ (দুই) বছরের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো কমিটির যে কোনো পদের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবে।
(৮) অ্যাডহক কমিটিতে কোনো ব্যক্তি পরপর ২ (দুই) বারের অধিক সভাপতি, শিক্ষক প্রতিনিধি বা অভিভাবক সদস্য মনোনীত হতে পারবেন না।
(৯) অ্যাডহক কমিটির সভাপতি বা কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে বা পদত্যাগ করলে ৭ (সাত) দিনের মধ্যে শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করতে হবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য নতুন সভাপতি বা সদস্য মনোনয়নের অনুমোদন গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ শিক্ষা বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠাতে হবে।
(১০) শিক্ষা বোর্ড, উপ-প্রবিধান (৯) এর অধীন প্রস্তাব প্রাপ্তির পর, অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব অনুমোদন করবে।