পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক : বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সিলেটের প্রভাবশালী নেতা এম ইলিয়াস আলী জীবিত থাকা নিয়ে ফের গুঞ্জন উঠেছে- তিনি বেঁচে আছেন। তবে এ বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো স্পষ্ট বক্তব্য আসেনি।
এদিকে গত ২০ আগস্ট মঙ্গলবার মাগরিবের নামাজের পর সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার গহরপুর জামেয়া মাদ্রাসার মসজিদে ইলিয়াস আলীর পারিবারিক উদ্যোগে তার সুস্থতা কামনায় খতমে বুখারি ও দোয়া মাহফিল হয়েছে। দোয়া মাহফিলে বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া মাহফিল আয়োজনের বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম জানান, এম ইলিয়াস আলীর ছোট ভাই যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মো. আছকির আলী এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। কারণ নিখোঁজ হওয়ার আগ পর্যন্ত গহরপুর মাদ্রাসার সঙ্গে ইলিয়াস আলী ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন।
তিনি জানান, আছকির আলী জানিয়েছেন ইলিয়াস আলী বিদেশের একটি হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তবে কোন দেশের হাসপাতালে সেটি জানা যায়নি।
দোয়া মাহফিলের পর এক ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং ‘ইলিয়াস আলী বেঁচে আছেন’ এমন কথা ছড়াতে থাকেন বিএনপি নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষ।
এই বিষয়ে ২১ আগস্ট বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা মোবাইল ফোনে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বলতে আমি ক্লান্ত। যারা গুজব ছড়াচ্ছে তারাই ভালো জানে এমনটি কেন করছে। আমরা শুধু পরিবারের পক্ষ থেকে বলছি তার (ইলিয়াস আলী) জন্য দোয়া করতে। আমাদের এখনো দৃঢ় বিশ্বাস- তিনি বেঁচে আছেন। প্রথম থেকেই আমরা এই আশা পোষণ করে আসছি। তাই সব সময় তার সুস্থতার জন্য বিভিন্ন স্থানে দোয়া করিয়েছি বা করাচ্ছি’।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাজধানীর বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী।
এরপর কেটে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়। ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।
স্বামীকে ফিরে পেতে সন্তানদের নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছুটে গিয়েছিলেন ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা। ইলিয়াসের তথ্য জানতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েও তিনি স্বামীর সন্ধান পাননি।
ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর রহস্যময় ‘আয়নাঘর’ থেকে মুক্তি পান নিখোঁজ কয়েকজন। ফেসবুকে কয়েকবার গুঞ্জন ওঠে ‘আয়নাঘর’ থেকে ইলিয়াস আলী ফিরে এসেছেন। পরে এই গুঞ্জন গুজব বলে প্রমাণিত হয়।
ইতোমধ্যে মাসুদ রানা নামে এক ব্যক্তি নিজেকে র্যাব সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশের এসআই দাবি করে ফেসবুকে জানান, ইলিয়াস আলীকে হাসিনা সরকার খুন করে সাগরে লাশ ফেলে দিয়েছে।
তবে বিএনপি নেতারা মনে করেন ইলিয়াস এখনো বেঁচে আছেন এবং শেখ হাসিনা সরকারের কোনো গোপন আস্তানায় বন্দি আছেন। এমন অবস্থায় নতুন করে গুঞ্জন উঠেছে ইলিয়াস আলী বেঁচে থাকার।