পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক : চিনিকাণ্ডের ঘটনায় সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগ ও পৌর ছাত্রলীগ ইউনিটকে বিলুপ্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান এ দুটি ইউনিটকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
তাদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শাখা দুটির নেতারা সংগঠনের শৃঙ্খলা, মর্যাদাহানিকর এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখা ও পৌর শাখার কমিটি বিলুপ্ত করা হলো।
গত ৮ জুন বিয়ানীবাজারে সরকারি নিলাম থেকে কেনা ২৪ লাখ টাকার চিনি লুটের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মী জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতে মোবাইল ফোনে চিনি লুটের কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফাঁস হওয়া ৬ মিনিট ২ সেকেন্ডের ফোনালাপটিতে লুট করা চিনি কীভাবে ভাগভাগি করা হয়েছে, কারা নিয়েছেন, উদ্ধার করা যাবে কীভাবে, তা বলতে শোনা যায়।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২৪ সনের ১১ মার্চ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখায় জুয়েল আহমদ শিপুকে সভাপতি ও জাহিদুল ইসলাম তাহমিদকে সাধারণ সম্পাদক করে ৮১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। অপরদিকে পৌর শাখায় আশরাফুল আলম সাকেলকে সভাপতি ও রেদওয়ান আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ।
Π চিনিকাণ্ডে টক অব দ্য বিয়ানীবাজার:
এদিকে বিয়ানীবাজারে ট্রাকভর্তি চিনি কাণ্ডের ঘটনায় ১১ জনের নামোল্লেখসহ থানায় মামলা হয়েছে। গত ১১ জুন মামলাটি করেন চিনির মালিক নজরুল ইসলাম। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৮০ বস্তা চিনি উদ্ধার ও একটি পিকআপ জব্দ করে। ঐ রাতেই এজাহারভুক্ত দুই আসামী কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হোসাইনপুর গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে বর্তমানে বিয়ানীবাজার পৌরসভার দাসগ্রামের লিচুটিলাস্থ ছাত্তার মিয়ার বাড়ির ভাড়াটে মো. লিটন মিয়া (২৬), বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর বোবারগুল এলাকার মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে বর্তমানে সুপাতলা গ্রামের বাসিন্দা হাসান (২১) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রাপ্ত সূত্রমতে, গত ৮ জুন শনিবার ভোর ৬টার দিকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের বিয়ানীবাজার অংশের চারখাই লালপুর এলাকায় সরকারি নিলাম থেকে কেনা বিয়ানীবাজারের নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর ২৪ লাখ টাকার ৪শ’ বস্তা চিনি ও চিনি বহনকারী একটি ট্রাক ছিনতাইয়ের শিকার হয়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে চিনি ছিনতাইকান্ডে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি ওঠে আসে।
পুলিশের বিরুদ্ধে চিনি উদ্ধারে টালবাহানার অভিযোগ উঠলেও শেষপর্যন্ত পুলিশ ১১ জনের নামে মামলা নেয়। এ নিয়ে এজাহারভুক্ত আসামীদের ফোনালাপ, ফেসবুকের নানান স্টেটাসে চিনিকান্ডে টক অব দ্য বিয়ানীবাজার।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেবদুলাল ধর বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এমনকি পৌরসভার দুটি স্থান থেকে ৮০ বস্তা চোরাই চিনি উদ্ধার ও একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় প্রকৃত জড়িতরা যতই শক্তিশালী হোন না কেন, কোন ছাড় পাবেন না।