পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক : টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিয়ানীবাজার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ফের প্লাবিত হয়েছে। গতকাল রবিবার মধ্যরাত থেকে সোমবার (৩ জুন) সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার আলীনগর, চারখাই, দুবাগ, শেওলা, কুড়ারবাজার, মুড়িয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। কেবল বাড়িঘর নয়, বিয়ানীবাজারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকাও প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, বীজতলা ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন বানবাসী মানুষজন। বিশেষ করে নিচু এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। নদীর বাঁধ ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। ক্ষতির শিকার হচ্ছেন মৎস্য চাষীরা।
আজ বিয়ানীবাজারের বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল, ৫ নং কুড়ার বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুতিউর রহমান-সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৬৮ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে, মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, প্রতিটি ইউনিয়নে রিসোর্স টিম গঠন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীর ব্যবস্থা রয়েছে। দুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামীণ রাস্তাঘাট দ্রুত চলাচল উপযোগী করার পদক্ষেপ নেয়া হবে। পরিদর্শন শেষে তিনি বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী শামীম জানান, বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রূমের মাধ্যমে মনিটরিং কাজ অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তা দানে সবধরনের প্রস্তুতি হাতে নেওয়া হয়েছে। বন্যার পানি নামার পর ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় করা হবে বলে জানান তিনি। আর বাঁধ ভাঙা স্থানগুলোও মেরামতের জন্য দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদফতর সিলেটের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব আহমদ জানিয়েছেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ২২৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরপর সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আরও ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
সিলেট জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মোজয় দত্ত জানিয়েছেন- সিলেট জেলায় ১৩১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। নৌকাযোগে এসব মেডিকেল টিমের সদস্যরা বন্যার্তদের মধ্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি উপজেলায় চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি একজন সার্বিক বিষয় মনিটরিং করছেন একজন ডাক্তার। বন্যাকবলিত এলাকায় রোগ ব্যাধিগ্রস্ত মানুষজন বর্তমানে ভাইরাস জ্বরে বেশি আক্রান্ত। তবে বন্যার কারণে রোগীর সংখ্যা এখনো বাড়েনি। পানি নামলে হয়তো রোগী বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।