✍️ পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক: দেশের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, আওয়ামী লীগকে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেনি।
বুধবার লন্ডনের প্রখ্যাত পররাষ্ট্রনীতি গবেষণা সংস্থা চ্যাথাম হাউস-এ এক আলাপচারিতায় প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অধ্যাপক ইউনূস। আলাপচারিতায় সভাপতিত্ব করেন চ্যাথাম হাউসের পরিচালক ব্রনওয়েন ম্যাডক্স।
Π রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাখ্যা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল কি না, সেটিই এখন বিতর্কের বিষয়। একটি দল যদি গুম, খুন ও দুর্নীতিতে জড়ায়, তাহলে সেটিকে রাজনৈতিক দল বলা যায় কি না, এ নিয়ে জাতির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের মানুষ ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশত্যাগ উদ্যাপন করেছিল। তারা মনে করেছিল, একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান হয়েছে। কিন্তু যারা পালিয়ে গেছে, তারা এখনও বাইরে থেকে সক্রিয়। এখন পর্যন্ত দলটির কেউ অনুশোচনা বা দুঃখ প্রকাশ করেনি।”
Π নিষেধাজ্ঞা নয়, নিরাপত্তাজনিত স্থগিতাদেশ
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি। তবে দেশের রাজনৈতিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে তাদের কার্যক্রম বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখা হবে। এটি জাতির নিরাপত্তার স্বার্থে গৃহীত একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ।”
Π নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আশাবাদ
আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর ও অবাধ নির্বাচন হবে। ১৭ বছর পর দেশের মানুষ সত্যিকারের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।”
তিনি জানান, আগামী জুলাই মাসে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে “জুলাই সনদ” ঘোষণা করা হবে, যা হবে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার বাস্তবায়নের রূপরেখা।
Π শেখ হাসিনা ও ভারতের অবস্থান
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে ইউনূস বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেছেন। মোদি তাঁকে বলেন, “এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।”
Π গণভোট নয়, রাজনৈতিক ঐকমত্যই সমাধান
গণভোটের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইউনূস বলেন, “গণভোট অর্থহীন হতে পারে কারণ জনগণ অনেক সময় বুঝে না তারা কী বিষয়ে ভোট দিচ্ছে। বরং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমত হলে সেটিই গণভোটের চেয়েও কার্যকর হবে।”
Π ভবিষ্যতের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নয়
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি এবং তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের কেউ ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারে অংশ নিতে আগ্রহী নন। তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে সুশৃঙ্খল রূপান্তর নিশ্চিত করা এবং ক্ষমতা একটি নির্বাচিত সরকারকে হস্তান্তর করা।