—পঞ্চখণ্ড আই পোর্টাল সম্পাদকীয়
২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার—বাঙালি জাতি এদিন এক হৃদয়বিদারক ট্র্যাজেডির সাক্ষী হলো। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজেআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে নগরী, ধসে পড়ে ভবনের অংশবিশেষ, আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে অসংখ্য প্রাণ।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় নিহত ২০ জন, যাঁদের মধ্যে ১৭ জনই শিশু শিক্ষার্থী। আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭১ জনে। আহতদের মধ্যে অনেকেই দগ্ধ, শ্বাসকষ্টে কাতর কিংবা তীব্র মানসিক ট্রমায় ভুগছেন।
● একজন শিক্ষিকার আত্মত্যাগ
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে একজন সাহসী শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে জীবন বাঁচাতে সহায়তা করে নিজে আগুনে পুড়ে শহিদ হন। এ ঘটনা আমাদের চোখে শুধু ট্র্যাজেডি নয়, এটি এক মাতৃসুলভ আত্মবিসর্জনের মহাকাব্য।
● রাষ্ট্রীয় শোক
এই বেদনাদায়ক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জুলাই মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দোয়া মাহফিল ও শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে।
● নতুন করে পুরনো প্রশ্ন
এই দুর্ঘটনা একটিবারের জন্য হলেও আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়—বাংলাদেশে সামরিক ও বেসামরিক বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাস দীর্ঘ এবং বেদনাবিধুর। প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা নতুন নয়, কিন্তু প্রতিবারই আমরা হারাচ্ছি প্রিয়জন, সম্ভাবনা, ভবিষ্যৎ।
প্রতিবারই আমরা শুনি, ‘তদন্ত চলছে’। কিন্তু বারবার এমন মৃত্যুর মিছিল কতটা টলাতে পারে আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনাকে?
● চূড়ান্ত দায়বদ্ধতার সময় এখনই
এবার আর প্রতীক্ষা নয়। স্বচ্ছ ও দ্রুত তদন্ত, দায়ীদের চিহ্নিতকরণ এবং বিশেষ করে প্রশিক্ষণ বিমান রক্ষণাবেক্ষণে আধুনিকীকরণ ও নিরাপত্তা প্রোটোকলের কঠোর পর্যালোচনা এখন সময়ের দাবি। না হলে আরেকটি মাহেরীন চৌধুরী, আরেকটি শিশুর প্রাণ, আবারও হারিয়ে যাবে শোকবার্তায়।
★> শোক আর সম্মানের সঙ্গে,
– সম্পাদকীয় বিভাগ