
পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক :
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আশিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
গত আগস্টে প্রকাশিত ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫’ প্রজ্ঞাপনে নতুন ওই দুটিসহ মোট চার বিষয়ে সহকারী শিক্ষকের পদ যুক্ত করা হয়েছিল। তবে গত ২ নভেম্বর সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ দুটি বাতিল করা হয়।
রুলে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে—কেন ২ নভেম্বরের সংশোধিত প্রজ্ঞাপনটি অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানকে দুই সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লার রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করা হয়। ব্যারিস্টার শুক্লা নিজেই আদালতে রিটটি উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ ও মর্যাদার সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় শারীরিক প্রশিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক চর্চা সুস্থ জীবন ও সার্বিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য। সংবিধানের মৌলিক অধিকারের অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের সুস্থ থাকার অধিকার রয়েছে।
এ ছাড়া জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুসারে নাগরিকদের সর্বাঙ্গীণ শিক্ষা ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সদস্য রাষ্ট্রগুলোর। তাই, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত সংবিধান ও এসডিজি—উভয়ের পরিপন্থী।
ব্যারিস্টার শুক্লা আরও জানান, বাংলাদেশে প্রায় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লাখ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলার সুযোগ অপরিহার্য। এসব কার্যক্রম পরিচালনায় পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্রীড়াবিদ বা সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে গড়ে উঠবে না।
তিনি সতর্ক করে বলেন, এই ঘাটতি দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় সক্ষমতা ও উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।