পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক :
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ১৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পর গৃহীত হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে (স্মারক নং ০৭.০০.০০০০.১৫৩.০০.০১৮.১০-২৬৩) এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের সাড়ে ৭ (৭.৫) শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া পাবেন। আগামী অর্থবছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুলাই থেকে আরও সাড়ে ৭ শতাংশ যুক্ত হয়ে মোট ১৫ শতাংশ বাড়ি ভাতা কার্যকর হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বাড়ি ভাতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে—
১. পরবর্তী বেতনস্কেলে বর্ণিত অতিরিক্ত সুবিধাটি সমন্বয় করতে হবে।
২. এমপিওভুক্ত ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা–২০২১’, ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা–২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)’ এবং ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (ভোকেশনাল, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও মৎস্য ডিপ্লোমা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা–২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)’ অনুসরণপূর্বক নিয়োগের শর্তাদি পালন করতে হবে।
৩. এ ভাতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো প্রকার বকেয়া প্রাপ্য হবে না।
৪. ভাতা প্রদানে আর্থিক বিধি-বিধান কঠোরভাবে মানতে হবে।
৫. ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম হলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায় বহন করবেন।
৬. প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় জি.ও. জারি করে তার চার কপি অর্থ বিভাগে পৃষ্ঠাঙ্কনের জন্য পাঠাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আজকের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষা বিভাগের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।” মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, নভেম্বর ২০২৫ থেকেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সাড়ে ৭ শতাংশ (ন্যূনতম ২,০০০ টাকা) বাড়ি ভাতা পাবেন এবং ২০২৬ সালের জুলাই থেকে পূর্ণ ১৫ শতাংশ কার্যকর হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির এই বাস্তবায়ন শিক্ষক সমাজের মর্যাদা ও জীবনের মান উন্নয়নে সহায়ক হবে। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি এই সিদ্ধান্তে গর্বিত।”
তিনি আরও বলেন, “এই সাফল্য কোনো একক ব্যক্তির নয়, এটি যৌথ প্রয়াসের ফল। শিক্ষকদের আন্দোলন আমাদের বাস্তবতা বুঝিয়েছে, সরকার দায়িত্বশীলভাবে সাড়া দিয়েছে। এখন সময় ক্লাসে ফিরে যাওয়ার—আমাদের আসল দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের প্রতি।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় শিক্ষক সমাজে স্বস্তি নেমে এসেছে। তাঁদের মতে, বাড়ি ভাতা বৃদ্ধির ফলে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক চাপ কমবে এবং তাঁরা আরও মনোযোগীভাবে শিক্ষাদানে সম্পৃক্ত হতে পারবেন।
শিক্ষক নেতারা মনে করেন, এটি শুধু একটি অর্থনৈতিক সুবিধা নয়, বরং শিক্ষক সমাজের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলতার প্রতীক।