পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক :
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবিক সংহতি ও গঠনমূলক আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি প্রতিশ্রুতির পুনঃপ্রতিফলন হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া বার্তায় তিনি সফরের সাফল্যের নানা দিক তুলে ধরেন।
● গণতান্ত্রিক অঙ্গীকারের পুনর্ব্যক্ত
প্রেস সচিব জানান, ইউএনজিএ-তে দেওয়া বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থার প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করেছেন। তিনি স্বাধীন, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক মহলকে আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশ জনগণ ও বৈশ্বিক অংশীদারদের লালিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় প্রস্তুত।
● বহুদলীয় প্রতিনিধিদল ও শক্ত বার্তা
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফরে তিন রাজনৈতিক দলের ছয়জন প্রতিনিধি ছিলেন। কূটনীতিক, প্রবাসী নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের বৈঠক বিশ্বের কাছে শক্ত বার্তা দিয়েছে যে গোটা বাংলাদেশই গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে ঐক্যবদ্ধ।
● দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও অংশীদারিত্ব জোরদার
সফরে অধ্যাপক ইউনূস ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে গণতান্ত্রিক শাসন, বাণিজ্য, জলবায়ু সহনশীলতা ও মানব উন্নয়ন আলোচনায় গুরুত্ব পায়।
এছাড়া তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্রান্ডি, ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এবং নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমাসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
● রোহিঙ্গা ইস্যুতে নেতৃত্ব
রোহিঙ্গা সংকট সফরের অন্যতম মূল বিষয় ছিল। প্রেস সচিব জানান, অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকগুলোতে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দেন এবং আন্তর্জাতিক মহলকে এ ইস্যুতে মনোযোগ ধরে রাখার আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে রোহিঙ্গা সহায়তায় ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি অর্জনও সফরের উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
● অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও শ্রমবাজার সম্প্রসারণ
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘকে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের অগ্রগতির স্বাধীন মূল্যায়ন করতে অনুরোধ জানান, যা আন্তর্জাতিক আস্থার বহিঃপ্রকাশ। পাশাপাশি কসোভো, আলবেনিয়া ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা উন্মোচিত হয়েছে। এটি প্রবাসী আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি জনগণের পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারে সহায়ক হবে।