পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক :
ঢাকার গুলশানে সাবেক এক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ (২৪)–এর পারিবারিক পটভূমি ও সাম্প্রতিক উত্থান ঘিরে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার একটি গ্রামে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, একসময় যে পরিবার টিনশেড ঘরে বসবাস করত, সেই রিয়াদের পরিবারের জন্য এখন নির্মিত হচ্ছে চার কক্ষবিশিষ্ট একটি পাকা ভবন। আড়াই মাস আগে শুরু হওয়া নির্মাণকাজের ছাদ ঢালাই ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এমন হঠাৎ উত্থানে অবাক অনেকেই।
রিয়াদের দাদা ওয়ালিউল্লাহ ও তার বাবা আবু রায়হান পেশায় ছিলেন রিকশাচালক। বড় ভাইও একই পেশায় যুক্ত ছিলেন। এখন আর কেউ রিকশা চালান না। সবাই কৃষি কাজে লেগেছেন। রিয়াদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার ৯নং নবিপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে। নবিপুর বাজারের দক্ষিণ পাশের বেপারি বাড়িতে তাদের বসবাস।
এলাকাবাসীর মতে, রিয়াদ গত ৫ আগস্টের পর নিজেকে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে পরিচিত করাচ্ছেন এবং ঘনঘন বাড়িতে যাতায়াত করছেন। পোশাকে-আশাকে এসেছে পরিবর্তন, এমনকি একটি দামি মোটরসাইকেলও কিনেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
রিয়াদের পরিবার অবশ্য বলছে, ভবন নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে দীর্ঘদিনের জমানো অর্থ, অনুদান ও ঋণ। তবে অনেকেই এই দাবি মানতে নারাজ। এক প্রবীণ প্রতিবেশী (৬০) বলেন, “শুনেছি ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় রিয়াদ গ্রেপ্তার হয়েছে। বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও এলাকাবাসী এখন নানা প্রশ্ন তুলছেন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়াদের এক সহপাঠী জানান, “রিয়াদ পড়াশোনায় মেধাবী ছিল এবং স্থানীয় কয়েকজন বিত্তশালীর সহায়তায় সে মজিব কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।”
এলাকার মানুষ বলছে, আগে যে ছেলেটি সাধারণ জীবনযাপন করত, তার আচরণ ও অবস্থানে হঠাৎ এতো বড় পরিবর্তনের পেছনে কী আছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
এ বিষয়ে সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “৫ আগস্টের পর রিয়াদ এলাকায় এসেছিলেন বলে শুনেছি। তিনি কিছু লিফলেট বিতরণ করেছেন এবং বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে তার ছবি রয়েছে বলেও জানতে পেরেছি। তবে ঢাকায় চাঁদাবাজির মামলার বিষয়টি ঢাকার পুলিশের দায়িত্বাধীন।”
এলাকাবাসীসহ সচেতন মহল রিয়াদের উত্থান নিয়ে আরও অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছেন।