পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক (বিয়ানীবাজার) :
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আলতাফ হোসেন। বৃহস্পতিবারও তিনি চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে সেবা কার্যক্রম পরিচালনার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন এবং দাবি করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েই তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মুন্না বিষয়টি সরাসরি নাকচ করে দিয়ে জানান, “এ রকম কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।” তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের লিখিত অভিযোগ ইতোমধ্যে সিলেটের জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমান উদ্দিনকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ১৯ মে’র এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর থেকে পরিষদের চেয়ারে বসছেন প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আলতাফ হোসেন। যদিও তার এ দায়িত্ব গ্রহণে আইনি প্রক্রিয়া মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করছেন, কোনো সাধারণ সভা ছাড়াই এবং ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াই তিনি নিজ উদ্যোগে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ফয়জুল হক নজমুল বলেন, “বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান হয়েছিলেন, এবারও একই কৌশলে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ।”
তিনি আরও বলেন, “চেয়ারম্যান বরখাস্ত হওয়ার পর কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল। তখন ইউএনও মহোদয় ঢাকায় প্রশিক্ষণে ছিলেন। তাহলে কার অনুমতিতে কার্যালয় খোলা হলো?”
এদিকে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দারা ‘ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে’ মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে অংশ নেন পরিষদের একাধিক সদস্য, এলাকাবাসী ও সমাজকর্মীরা।
অভিযোগ উঠেছে, আলতাফ হোসেনের ভাই সরোয়ার হোসেন একজন বিএনপি নেতা হলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগের নামে ভাইকে চেয়ারে বসিয়েছেন।
ইউএনও গোলাম মোস্তফা মুন্না বলেন, “চেয়ারম্যানের কার্যালয় যেভাবে খোলা হয়েছে, সেটি নিয়মবহির্ভূত। দায়িত্ব পালনে ব্যত্যয় হয়েছে, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। তিনি এ সময়ে যেসব কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেছেন, তা বাতিল বলে গণ্য হবে।”
উল্লেখ্য, এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে এবং জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।