1. news@panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই : পঞ্চখণ্ড আই
  2. info@www.panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই :
শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
প্রত্যাবর্তনের রাজনীতি — “শেষ ভালো যার, সব ভালো তার” নিষেধাজ্ঞার বলয় পেরিয়ে সিলেটের ছয় আসনের পাঁচটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী, বদলাচ্ছে ভোটের সমীকরণ ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’: সবাইকে নিয়ে নিরাপদ ও প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার তারেক রহমানের সিলেট-৬ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুন নূর প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা ২ জানুয়ারি সমাজসেবী শামীমা মোস্তফাকে সম্মান জানাল US-Bangla Global Association সিলেট-৬ আসনে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত তরুণ নেতা হাফিজ ফখরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে পাল্টে যেতে পারে ভোটের সমীকরণ বাংলাদেশ হাইকমিশনের দিল্লিতে সাময়িক কনস্যুলার সেবা ও ভিসা কার্যক্রম বন্ধ লোকসংগীতের নিরব সাধক: শিল্পী এস এম মানিক শব্দের ভেতর আমি : আত্মঅনুসন্ধান, সমাজভাবনা ও মানবিক উচ্চারণ

প্রত্যাবর্তনের রাজনীতি — “শেষ ভালো যার, সব ভালো তার”

সম্পাদক | পঞ্চখণ্ড আই অনলাইন পোর্টাল
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর কোনো নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কখনোই কেবল ব্যক্তিগত ঘটনা থাকে না। এটি রাষ্ট্র, রাজনীতি ও নাগরিক প্রত্যাশার সঙ্গে যুক্ত একটি তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক প্রত্যাবর্তনও তেমনই এক রাজনৈতিক ঘটনা, যা আবেগের পাশাপাশি যুক্তিসংগত মূল্যায়নের দাবি রাখে।

প্রত্যাবর্তনকালীন বক্তব্যের ভাষা ও কাঠামো বিচার করলে স্পষ্ট হয়—এটি ছিল পরিকল্পিত, সংযত এবং ভবিষ্যতমুখী। শান্তি, নিরাপত্তা, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ও ন্যায়পরায়ণতার কথা তিনি সামনে এনেছেন। রাজনীতিতে ভাষা কেবল বক্তব্য নয়, এটি অবস্থানেরও প্রকাশ। সেই বিচারে তারেক রহমান তাঁর ফিরে আসার ক্ষণে উত্তেজনার বদলে সংযমকে বেছে নিয়েছেন—যা বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি তাৎপর্যপূর্ণ দৃষ্টান্ত।

তবে সম্পাদকীয় দৃষ্টিভঙ্গি দাবি করে আরও গভীর প্রশ্ন। দীর্ঘ নির্বাসন একজন রাজনীতিককে যেমন চিন্তার সুযোগ দেয়, তেমনি তাঁকে রাজনৈতিক বাস্তবতা থেকে দূরেও রাখে। এখানেই ‘পরিকল্পনা’ ও ‘বাস্তবায়ন’-এর ব্যবধান তৈরি হয়। তারেক রহমান যে ‘প্ল্যান’-এর কথা বলছেন, সেটির মূল্যায়ন কেবল বক্তৃতা দিয়ে সম্ভব নয়; তা নির্ভর করবে মাঠের রাজনীতি, সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত এবং ক্ষমতার চর্চার ধরনে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে অতীত বিচ্ছিন্ন কোনো অধ্যায় নয়। তারেক রহমানকে মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও তাঁর অতীত ভূমিকা, রাজনৈতিক অবস্থান ও সিদ্ধান্তগুলো অবধারিতভাবেই আলোচনায় থাকবে। একই সঙ্গে এটিও সত্য—কোনো রাজনীতিকের ভবিষ্যৎ বিচার করা যায় কেবল তাঁর কর্মের ধারাবাহিকতা দিয়ে। অতীত স্মরণ করা যেমন জরুরি, তেমনি ভবিষ্যৎকে একেবারে অগ্রাহ্য করাও গণতান্ত্রিক মননের পরিচায়ক নয়।

এই প্রেক্ষাপটে নাগরিক সমাজের অবস্থান হওয়া উচিত সংযত ও পর্যবেক্ষণমূলক। এখনই চূড়ান্ত সমর্থন বা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান—দুটোই বাস্তববিবর্জিত। রাজনীতি কোনো ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির প্রতিযোগিতা নয়; এটি নীতিনিষ্ঠতা, জবাবদিহি ও ফলাফলের বিষয়। তারেক রহমান যদি সত্যিই একটি ভিন্ন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চান, তবে সেটি প্রমাণ করতে হবে তাঁর দলের আচরণ, আন্দোলনের ভাষা এবং ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র পরিচালনার রূপরেখার মধ্য দিয়ে।

একই সঙ্গে এটিও স্পষ্ট করা প্রয়োজন—রাজনৈতিক বিরোধিতা মানেই ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নয়। বরং শক্তিশালী বিরোধিতা গণতন্ত্রের স্বাস্থ্যচিহ্ন। তারেক রহমানের জন্য প্রকৃত পরীক্ষা হবে এমন এক বাস্তবতা তৈরি করা, যেখানে তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীরাও তাঁর কাজের ইতিবাচক দিক অস্বীকার করতে না পারেন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস বারবার দেখিয়েছে—বক্তৃতা দিয়ে আস্থা তৈরি করা যায়, কিন্তু টিকিয়ে রাখা যায় না। আস্থা টেকে কেবল সিদ্ধান্ত, আচরণ ও ফলাফলের মাধ্যমে। “শেষ ভালো যার, সব ভালো তার”—এই প্রবাদ আজও রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে প্রযোজ্য।

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন তাই কোনো সমাপ্তি নয়; এটি একটি নতুন পর্যায়ের সূচনা। এই পর্যায় কেমন হবে, তা নির্ধারণ করবে তাঁর পরিকল্পনার বাস্তব প্রয়োগ, তাঁর রাজনৈতিক সংযম এবং ক্ষমতার প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি।

সম্পাদকীয় দৃষ্টিতে তাই আজ একটাই অবস্থান যুক্তিসংগত— আবেগ নয়, বিশ্লেষণ; উচ্ছ্বাস নয়, মূল্যায়ন; প্রতিশ্রুতি নয়, ফলাফলের অপেক্ষা।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট