1. news@panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই : পঞ্চখণ্ড আই
  2. info@www.panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
নীরবতার শক্তি: আত্মশুদ্ধি ও সামাজিক শান্তির পথ কঠোর ভিসা নীতিতে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো: বাংলাদেশ–পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যত বন্ধ বিয়ানীবাজার উপজেলা স্কাউট সভাপতি ইউএনও গোলাম মুস্তাফা মুন্নার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আরও ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল বিএনপি বিয়ানীবাজারে ইউএনও’র বিদায় সংবর্ধনা—শিক্ষক সমাজের সম্মাননা ও শুভেচ্ছা বিয়ানীবাজারের নতুন ইউএনও হিসেবে উম্মে হাবিবা মজুমদার পদায়ন চারখাইবাসীর শোক: প্রখ্যাত হোমিও চিকিৎসক ডা. সরওয়ার আহমদ আর নেই টাকা ভিক্ষা করেও পাওয়া যায়, তবে সম্মান নয় বিয়ানীবাজারে ‘আলোর মানুষ আতাউর রহমান’ স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ ও সম্মাননা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত শ্রীধরায় মরহুম জসিম উদ্দিন জুয়েলকে স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

নীরবতার শক্তি: আত্মশুদ্ধি ও সামাজিক শান্তির পথ

লেখক Π আতাউর রহমান
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

আজকের ডিজিটাল যুগে আমরা এমন একটি সময়ের ভেতর দিয়ে চলছি, যেখানে কথা বলা, প্রতিক্রিয়া দেওয়া, মন্তব্য করা—এসব যেন বাধ্যতামূলক আচরণে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট, একটি মতভেদ বা সামান্য ভুল বুঝাবুঝি মুহূর্তেই রূপ নেয় বিতর্কে। ঠিক এমন বাস্তবতার মধ্যেই তরুণ প্রজন্মের একজন যখন লেখে— “A lot of people underestimate how powerful silence can be…”—সেটি শুধুই ব্যক্তিগত অনুভূতি নয়; বরং একটি গভীর সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষা।

নীরবতা—দুর্বলতা নয়, পরিণত বুদ্ধিমত্তা

আমরা অনেকেই মনে করি, যেকোনো পরিস্থিতিতে তর্কে জিততে হলে জবাব দিতে হবে। অথচ ইসলামী ও নৈতিক উভয় শিক্ষাই বলে—প্রতিক্রিয়ার চেয়ে সংযম কখনো কখনো অধিক শক্তিশালী। রাগে, অহংকারে বা আবেগে বলা একটি বাক্য জীবনভর সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে; অথচ নীরবতার একটি মুহূর্ত অনেক বিপদ থেকেই রক্ষা করে।

উদাহরণ:
একজন বাবা তার ছেলেকে হঠাৎ ভুল বোঝে রাগের মাথায় কিছু উগ্র কথা বলে ফেললেন। ছেলে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিতে পারতো। কিন্তু সে চুপ রইলো—মুহূর্তের উত্তেজনা দমে গেলে বাবা নিজেই বুঝতে পারলেন তাঁর ভুল। সেই নীরবতাই সম্পর্কটিকে বাঁচিয়ে দিল।

এই নীরবতা দুর্বলতা নয়—এটি সম্পর্ক রক্ষার সক্ষমতা, যা আজকের সমাজে ক্রমেই বিরল হয়ে উঠছে।

আত্মরক্ষার ঢাল

গীবত, পরনিন্দা ও তুচ্ছ বিষয়ে বিতর্ক—এগুলোতে জড়িয়ে আমরা নিজের অজান্তেই পাপ ও অনর্থ ডেকে আনি। নীরবতা কখনো কখনো মানুষের চরিত্রকে ঢেকে রাখে, আর বহু অনাকাঙ্ক্ষিত পাপ থেকে মুক্তি দেয়।

উদাহরণ:
কোনো বন্ধু বা সহকর্মী কারো দোষ চর্চা করছে। আপনি যদি যুক্ত হন, আলোচনার দোষ আপনাকেও স্পর্শ করবে। কিন্তু আপনি যদি নীরব থাকেন বা বিষয় পরিবর্তন করেন—আপনার হৃদয়ও রক্ষা পেল, আমলও রক্ষা পেল।

আল্লাহ জানেন—অব্যক্ত কথার মর্ম

স্ট্যাটাসের শেষ লাইনটি বিশেষভাবে গভীর:
“Allah knows what you wanted to say, what you held back, and what you stayed patient about.”

মানুষের কাছে নীরবতা দুর্বলতা মনে হতে পারে, কিন্তু আল্লাহর কাছে তা ধৈর্য, পরহেজগারি ও আত্মশুদ্ধির ইবাদত। ইসলাম শেখায়—
“যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য নীরব থাকে, তার জন্য আল্লাহ সন্তুষ্টি লিখে দেন।”

এমন ধারণা তরুণদের মাঝে দেখা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। কারণ এটি ব্যক্তিগত চরিত্র গঠনের পাশাপাশি সমাজে শৃঙ্খলা ও সৌহার্দ্য তৈরি করতে সাহায্য করে।

শান্তির জন্য নীরবতার সংস্কৃতি

আজকের পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, রাজনীতিতে, এমনকি ধর্মীয় আলোচনাতেও—অতিরিক্ত কথার কারণে বিভক্তি বাড়ছে। যদি প্রতিটি মানুষ নিজের ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিখত, তবে পারিবারিক কলহ কমতো, সামাজিক বিশৃঙ্খলা কমতো, এমনকি অনলাইনের বিষাক্ত পরিবেশও প্রশমিত হতো।

শেষ কথা

আমার পুত্রধনের ফেসবুকে দেয়া এই স্ট্যাটাস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—
সঠিক সময়ে নীরব থাকা মানে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া।
এটি হৃদয়ের পরিপক্বতার প্রকাশ; নিজের অহংকার দমন করার সাহস; আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম উপায়।

নীরবতার এই বার্তা যদি তরুণসমাজ গ্রহণ করে, তবে শুধু ব্যক্তিগত নয়—আমাদের সামষ্টিক জীবনও আরও শান্ত, মার্জিত ও সুশৃঙ্খল হয়ে উঠবে।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট