এম সাত্তার আজাদ
কানাডার টরন্টোতে বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি টরন্টো, কানাডা ইনক–এর দোয়া অনুষ্ঠানে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দোয়ার এক পর্যায়ে সংগঠনের উপদেষ্টা বাসিত প্রকাশ্যে বিগত সরকারকে “স্বৈরাচার” আখ্যা দেন, যা উপস্থিতদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
অনুষ্ঠানটি ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় টরন্টো সংলগ্ন ২০০ হায়মাস রোডে অনুষ্ঠিত হয়। নবনির্বাচিত ২০২৫–২০২৮ কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক উপলক্ষে আয়োজিত এই সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রায় সহস্রাধিক প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসী অংশগ্রহণ করেন। রাজনৈতিক মন্তব্যে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় অনুষ্ঠানটি পরিকল্পিত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থেকে কিছুটা বিচ্যুত হয়।
অনেকে সামাজিক মঞ্চে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া অনুচিত বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ, একটি অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের প্লাটফর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে কয়েকজন উপস্থিত ব্যক্তি মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দেন এবং বলেন, স্বৈরাচার আখ্যা যথার্থ এবং সত্য কথাকে বলার কোনো ক্ষতি নেই।
সদ্য বিদায়ী সভাপতি আব্দুল মোমিত বলেন, “বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি একটি সম্পূর্ণ সামাজিক সংগঠন। রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। ভবিষ্যতে সতর্ক থাকব।” নবনির্বাচিত সভাপতি সরফুল ইসলামও বলেন, “আমাদের সংগঠন অরাজনৈতিক। দোয়ার সময় দেওয়া ওই মন্তব্য উপযুক্ত ছিল না। ভবিষ্যতে আমরা এমন পরিস্থিতি এড়াব।”
অনুষ্ঠানের সময় আরেকটি বিষয় নিয়েও ক্ষোভ দেখা দেয়। সঞ্চালক মাইকে ঘোষণা দেন, প্রথম সারিতে সিনিয়র ও অতিথিদের বসার জন্য আসন নির্ধারিত হবে। কিন্তু ‘সিনিয়র’ শব্দের সুস্পষ্ট সংজ্ঞা না দেওয়ায় ষাটোর্ধ্ব অনেকেই চেয়ার ছেড়ে দেন, এবং তাদের সন্তানতুল্যরা সেই আসনে বসেন। অনেকে অভিযোগ করেন, সঞ্চালক স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়েছেন এবং কিছু যোগ্য অতিথিকে বাদ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দুই পর্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি আব্দুল মোমিত, দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত সভাপতি সরফুল ইসলাম। সঞ্চালনা করেন প্রথমে সাহাব উদ্দিন ও পরে মেহেদী হাসান মারুফ। শপথবাক্য পাঠ করান নির্বাচন কমিশনার তানভীন আহমদ চৌধুরী, জগলুল হক ও সোহেল ইবনে ইসহাক।
ডিনার শেষে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয় সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে। প্রবাসী সমাজের জন্য এটি একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা হলেও, রাজনৈতিক বক্তব্য সামাজিক আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত করা নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনার জন্ম দেয়।