1. news@panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই : পঞ্চখণ্ড আই
  2. info@www.panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই :
মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
আন নুর ইসলামিক কিন্ডার গার্ডেনে ফলাফল প্রকাশ ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত আজ বিয়ানীবাজার মুক্ত দিবস নীরবতার শক্তি: আত্মশুদ্ধি ও সামাজিক শান্তির পথ কঠোর ভিসা নীতিতে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো: বাংলাদেশ–পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যত বন্ধ বিয়ানীবাজার উপজেলা স্কাউট সভাপতি ইউএনও গোলাম মুস্তাফা মুন্নার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আরও ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল বিএনপি বিয়ানীবাজারে ইউএনও’র বিদায় সংবর্ধনা—শিক্ষক সমাজের সম্মাননা ও শুভেচ্ছা বিয়ানীবাজারের নতুন ইউএনও হিসেবে উম্মে হাবিবা মজুমদার পদায়ন চারখাইবাসীর শোক: প্রখ্যাত হোমিও চিকিৎসক ডা. সরওয়ার আহমদ আর নেই টাকা ভিক্ষা করেও পাওয়া যায়, তবে সম্মান নয়

দুর্গোৎসবে বিয়ানীবাজারে উৎসবের আমেজ: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক শানেস্বর বাজার

পঞ্চখণ্ড আই প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১২১ বার পড়া হয়েছে

পঞ্চখণ্ড আই প্রতিবেদক :
বিয়ানীবাজার পৌরশহর থেকে পশ্চিমের নদী তীরবর্তী তিলপাড়া ইউনিয়নের শানেস্বর বাজারে দাঁড়িয়ে আছে এক আশ্চর্য দৃশ্য—গায়ে গা লাগানো মসজিদ আর মন্দির। মাত্র কয়েক গজের ব্যবধানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে মুসলিম ও সনাতনী ধর্মের প্রার্থণালয়। ৭২ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে পাশাপাশি চলছে নামাজ ও পূজা, অথচ একবারও ঘটেনি কোনো দ্বন্দ্ব বা বিভেদ। বরং জায়গাটি হয়ে উঠেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জীবন্ত প্রতীক।

স্থানীয়দের মতে, প্রায় ৬ যুগ আগে নদীপথে আসা মুসলিম ব্যবসায়ীরা নামাজের জন্য মন্দিরের পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন, যা পরে শানেস্বর বাজার জামে মসজিদ নামে পরিচিত হয়। আজানের সময় থেকে নামাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরে ঢাক-ঢোল বন্ধ থাকে। নামাজ শেষে আবার শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয় মন্দির। একই উঠানে উভয় ধর্মের মানুষ যুগ যুগ ধরে শালীনতা বজায় রেখে পালন করছেন ধর্মীয় আচার।

● সম্প্রীতির বন্ধনে দুই ধর্মের মানুষ

মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি সেলিম উদ্দিন বলেন, “মসজিদ-মন্দির প্রায় কাছাকাছি সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করি।” স্থানীয় হিন্দু ধর্মীয় নেতা বিবেকানন্দ দাস জানান, জন্ম থেকে তিনি এ সম্প্রীতির দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে আসছেন।

শানেশ্বর গ্রামের পুজা সংশ্লিষ্ট এক প্রবীণ ব্যাক্তি যতীন্দ্র চন্দ্র নাথ বলেন, “একই উঠানে মসজিদ-মন্দির হলেও উভয় ধর্মের মানুষ এখানে বসবাস করে ও সম্প্রীতির বন্ধনে থেকে স্ব-স্ব ধর্ম পালন করে আসছে।”

বিয়ানীবাজার থানার ওসি আশরাফ উজ্জামান জানান, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়, যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, “মিনারের আজান ও মন্দিরের শঙ্খধ্বনি মিলেমিশে যেন এক মহামন্ত্র উচ্চারণ করে। ভিন্নতায় ভরা এই সহাবস্থানই প্রমাণ করে সম্প্রীতির আসল রূপ হলো একে অপরকে গ্রহণ করা।”

● শারদীয় দুর্গাপূজা: প্রস্তুতিতে উৎসবের আমেজ

গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিয়ানীবাজার উপজেলার ৫২টি মন্দির-মণ্ডপে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজা। ৪১টি সার্বজনীন ও ১১টি ব্যক্তিগত মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুরুতেই সরকারিভাবে প্রতিটি সার্বজনীন মণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল সরবরাহ করা হয়েছে।

পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুনাভ পাল চৌধুরী মোহন জানান, প্রতিটি মন্দিরে স্থানীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিয়ানীবাজার প্রেস ক্লাব সভাপতি সজীব ভট্টাচার্য বলেন, “এই বছর মহাষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। পঞ্জিকা মতে দেবী দুর্গা গর্জে আগমন করবেন এবং বিজয়া দশমীতে পালকীতে গমন করবেন।”

● নিরাপত্তায় কঠোর নজরদারি

বিয়ানীবাজার থানার ওসি আশরাফ উজ্জামান বলেন, প্রতিটি পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশ, আনসার বাহিনী, সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা টহলে থাকবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্না জানান, পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি হাতে নেওয়া হয়েছে।

● সম্প্রীতির প্রশংসায় ডিসি

৩০ সেপ্টেম্বর বিয়ানীবাজারের পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সিলেটের জেলা প্রশাসক সারোওয়ার আলম বলেন, “বিয়ানীবাজারে যে সম্প্রীতির ঐতিহ্য বিদ্যমান, তা পুরো দেশ ও সমাজের জন্য অনুকরণীয়।”

এভাবেই শানেস্বর বাজারের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদ-মন্দির কেবল একটি ধর্মীয় চর্চার স্থান নয়, বরং শতবর্ষব্যাপী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট