পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক :
সিলেটের গোয়াইনঘাটে শিশু নিপীড়নের ঘটনায় অবশেষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত মুয়াজ্জিন মৌলভী শরীফ উদ্দিনকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের একটি গ্রামের সমজিদের প্রাক্তন মক্তব শিক্ষার্থী (ইমরানা বেগম, ছদ্মনাম) জানান, ঘটনাটি ঘটে ২০২২ সালে। তখন তার বয়স ছিল প্রায় ১০ বছর। সে তার নানার বাড়ি থেকে মক্তবে পড়াশোনা করত। একদিন মুয়াজ্জিন শরীফ উদ্দিন তাকে রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক নিপীড়ন চালায় এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। ভয়ে সে বিষয়টি কাউকে জানায়নি, বরং নানার বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে যায়। বর্তমানে তার বয়স প্রায় ১৩/১৪ বছর।
সূত্র জানায়, শরীফ উদ্দিন কানাইঘাট উপজেলার সিঙ্গারীপাড় এলাকার মুহিবুর রহমানের ছেলে। বৈবাহিক জীবনে তিনি দুই স্ত্রীর স্বামী এবং দুই সন্তানের জনক। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, অতীতেও নারী সংক্রান্ত নানা কারণে তাকে কোথাও স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, অভিযুক্ত মৌলভী শরীফ উদ্দিনকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ঘটনাটি ২০২২ সালে সংঘটিত হয় এবং ঘটনাস্থল ছিল নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের একটি মক্তব। সে সময় শরীফ উদ্দিন স্থানীয় একটি জামে মসজিদে ছানী ইমামের দায়িত্বে ছিলেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিপীড়নের ভিডিও ভাইরাল হলে পুলিশ তাকে শনাক্ত করে ওসমানীনগরের তাজপুর থেকে আটক করে। তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
শিশু সুরক্ষা ও সামাজিক সচেতনতার বিষয়ে অভিভাবক, শিক্ষক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল। তাদের মতে, শিশুদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে শুনতে হবে এবং মক্তব, মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এমন ঘটনায় সামাজিকভাবে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া জরুরি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, শিশুদের প্রতি সহিংসতা বা যৌন নিপীড়ন কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। সমাজের সব স্তরের মানুষকেই শিশু সুরক্ষায় একসাথে কাজ করতে হবে।