আজ ১২ রবিউল আউয়াল, বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)–এর শুভ জন্মদিন। এ দিনটি শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, সমগ্র মানবজাতির জন্য আশীর্বাদময় দিন। কারণ তিনি ছিলেন বিশ্বজনীন শান্তির অগ্রদূত, ন্যায় ও সাম্যের প্রতীক, মানবতার মুক্তির সনদদাতা।
মক্কার অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজে যখন কুসংস্কার, নারীর প্রতি অবিচার, দারিদ্র্য ও অবমাননা বিরাজ করছিল—তখন তিনি এলেন আলোর পথপ্রদর্শক হয়ে। জাহেলিয়াতের আঁধার ভেদ করে তিনি মানুষকে শিখিয়েছেন দয়া, করুণা, ভ্রাতৃত্ব ও ন্যায়পরায়ণতা। তাঁর আহ্বান ছিল—‘মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব, দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আল্লাহর একত্ববাদে আত্মসমর্পণ।’
আজকের পৃথিবীতে যখন যুদ্ধ, বৈষম্য, সহিংসতা ও বিভাজনের অগ্নিকুণ্ড আমাদের গ্রাস করছে, তখন আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা প্রয়োজন—মহানবী (সা.)–এর জীবন ও শিক্ষা। তিনি বলেছেন, “শ্রেষ্ঠ মানুষ সে-ই, যে অন্য মানুষের উপকারে আসে।” বর্তমান সময়ের প্রতিটি সংকটে এই বাণীই হতে পারে মানবতার পরিত্রাণের সূত্র।
তাঁর জন্মদিন শুধু আনুষ্ঠানিকতা পালনের দিন নয়, বরং তাঁর আদর্শকে জীবনের প্রতিটি স্তরে ধারণ করার অঙ্গীকারের দিন। আমাদের পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে যদি আমরা ন্যায়ের চর্চা করি, দুর্বল ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই, ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই—তাহলেই প্রকৃত অর্থে এই দিনকে মর্যাদা দেওয়া হবে।
১২ রবিউল আউয়াল আমাদের মনে করিয়ে দেয়—শান্তি, দয়া ও মানবতার দীপ্ত আলোয় পৃথিবীকে আলোকিত করার অঙ্গীকার। মহানবী (সা.)–এর জন্মদিনে আমাদের শপথ হোক—তাঁর চেতনায় গড়ে তোলা একটি ন্যায়ভিত্তিক, শান্তিপূর্ণ ও মানবিক সমাজ।