বিয়ানীবাজারের চারখাই এলাকা থেকে গতকাল আড়াই কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের ভারতীয় অবৈধ কসমেটিকস পণ্য আটকের ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলার সাফল্যের দৃষ্টান্ত নয়, বরং সীমান্তবর্তী এলাকায় অবৈধ পণ্য পাচারের একটি গভীর সমস্যার ইঙ্গিত বহন করে।
পাথরের আড়ালে ট্রাকভর্তি কথিত ‘সৌন্দর্যবর্ধন’ ক্রীম বহনের ঘটনা প্রমাণ করে যে চোরাকারবারিরা কতটা সুপরিকল্পিত ও চতুর কৌশল ব্যবহার করছে। এসব কসমেটিকস পণ্যের বেশিরভাগই অনুমোদনহীন, রাসায়নিক উপাদানে বিপজ্জনক, এবং দীর্ঘমেয়াদে ত্বক ও শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। কেবলমাত্র সৌন্দর্যের লোভে পড়ে অনেকেই নিজের অজান্তে এসব বিষাক্ত পণ্য ব্যবহার করছেন, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি।
অন্যদিকে, এ ধরনের অবৈধ পণ্য আমদানি ও বিপণন দেশের বিপুল রাজস্ব ক্ষতির কারণ হয়। বৈধ আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতা ব্যাহত হয়, এবং রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সীমান্ত এলাকায় শক্তিশালী চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থামাতে হলে শুধু পুলিশি অভিযান যথেষ্ট নয়—প্রয়োজন গোয়েন্দা নজরদারি, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও কাস্টমসের সমন্বিত উদ্যোগ।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও স্পষ্ট হলো, অবৈধ কসমেটিকস বাণিজ্য রোধ করা শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্ব নয়; এটি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার প্রশ্ন। তাই প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে—অজানা উৎসের সস্তা সৌন্দর্যপণ্য কেনা মানে নিজের স্বাস্থ্য ও দেশের অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলা।
সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলের মানুষ, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বশীল ভূমিকা এবং পুলিশের কঠোর পদক্ষেপই পারে এই অবৈধ প্রবাহ রোধ করতে। অন্যথায়, এই অদৃশ্য বিষ ধীরে ধীরে সমাজ ও অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।