● পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক :
দীর্ঘদিন পর দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরছে প্রাতিষ্ঠানিক বৃত্তি পরীক্ষা। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই অষ্টম ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ‘জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা’ ও ‘প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা’ পুনরায় চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
➤ অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা: ১৬ বছর পর ফের চালু:
অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা পুনরায় চালুর বিষয়ে ২০ জুলাই ২০২৫ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বেগম বদরুন নাহার। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ।
সূত্র মতে, সর্বশেষ ২০০৯ সালে অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। পরে চালু হয় জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা, যা ২০২৩ সালে বাতিল করা হয় অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের দাবি এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালে নতুনভাবে চালু হচ্ছে অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা, যা শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধা যাচাইয়ের একটি উপায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিব জানান, ‘‘কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে এবং কোন প্রতিষ্ঠান এর বাস্তবায়ন করবে তা দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে।’’
তবে এখনো নির্ধারিত হয়নি কত শতাংশ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে—এ বিষয়ে একটি নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।
➤পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা: নির্ধারিত ২১-২৪ ডিসেম্বর:
অন্যদিকে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা ফের চালু করার সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে চলতি বছরের শেষভাগেই। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, যেখানে ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের জন্য। পরীক্ষা হবে বাংলা, ইংরেজি, প্রাথমিক গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ে। প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় নির্ধারিত ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসিই) চালু হওয়ার পর বৃত্তি পরীক্ষার প্রচলন বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই বৃত্তি প্রদান করা হতো।
➤এক নতুন ধারা ও প্রত্যাশা
শিক্ষাব্যবস্থায় দীর্ঘ বিরতির পর ফের বৃত্তি পরীক্ষার সূচনা অনেকেই ইতিবাচকভাবে দেখছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ ও পিছিয়ে পড়া এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য এটি হতে পারে উৎসাহ ও মেধা বিকাশের একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম। তবে প্রশ্নপত্রের মান, পরীক্ষা পদ্ধতি ও মূল্যায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাই হবে এই উদ্যোগের সার্থকতা নির্ধারণের মূল চাবিকাঠি।