পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক :
বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে কোচিং নির্ভরতা রোধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: সাব্বির আহমদ। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা—কলেজ চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী বা শিক্ষক, কেউই কোচিংয়ে যেতে পারবে না। কেউ গেলে তাকে অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য করা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সম্প্রতি কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কোচিংয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে—এমন অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি জানান, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলে স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন মহলকে সঙ্গে নিয়ে কলেজ চলাকালীন সময়ে পরিচালিত কোচিং সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, “আমার শিক্ষকরা যদি কোচিংয়ে যুক্ত থাকেন, তবে তা করতে পারবেন শুধুমাত্র বিকাল ৪টার পর। কলেজ সময়ের মধ্যে নয়—এ বিষয়ে কোনো ছাড় নেই।”
এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুদ দাইয়ান বলেন, “শিক্ষার্থীদের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কোচিংয়ে যাওয়া এবং কিছু শিক্ষকের এ সময় প্রাইভেট চর্চা নিঃসন্দেহে শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হতাশাজনক। এই বাস্তবতা থেকে উত্তরণের জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও আত্মনিরীক্ষা প্রয়োজন। অধ্যক্ষ সাব্বির আহমদের উদ্যোগকে আমরা শিক্ষক সমাজ হিসেবে স্বাগত জানাই এবং এর বাস্তবায়নে আমরা নৈতিক ও পেশাগতভাবে পাশে থাকবো।”
অন্যদিকে, বেশ কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, “যদি স্কুল-কলেজে ক্লাস সঠিকভাবে পরিচালিত হতো, তাহলে আমাদের সন্তানদের কোচিংয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়তো না। তাই একদিকে কোচিং বন্ধ করতে হবে, অন্যদিকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানও নিশ্চিত করতে হবে।”
কোচিং বাণিজ্য প্রসঙ্গে দাসউরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, “শিক্ষা একটি সেবামূলক পেশা। যদি এ পেশা বাণিজ্যে পরিণত হয়, তাহলে সমাজের মেরুদণ্ড দুর্বল হয়ে পড়বে। আমি অধ্যক্ষ সাব্বির আহমদের পদক্ষেপকে আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানাই। শিক্ষকদের উচিত শ্রেণিকক্ষে সময়মতো উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ পাঠদান নিশ্চিত করা। অভিভাবকদের আর্থিক দুর্ভোগ লাঘব ও শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখতে হলে নীতিনিষ্ঠ শিক্ষক ও প্রশাসনিক তৎপরতার সমন্বয় জরুরি।”