1. news@panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই : পঞ্চখণ্ড আই
  2. info@www.panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই :
শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ১২:০৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
মতিউর রহমান মাহমুদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ একজন আলোর বাহক: আব্দুদ দাইয়ানের গল্প সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে গঠিত হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি: এক মাসের মধ্যে কার্যকর হবে নতুন নীতিমালা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে জামায়াত: বিয়ানীবাজারে জনশক্তি সমাবেশে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সংগঠনের এক নির্ভীক কারিগর আলোকপ্রদীপ কবির খান বিয়ানীবাজারে মোটরসাইকেল চোরচক্রের সন্ধান: চারটি চোরাই যান উদ্ধার, দুই যুবক গ্রেফতার অধ্যাপক মোঃ তারিকুল ইসলাম ও তাঁর সমৃদ্ধ পথচলা চিকিৎসা সম্মেলনে অংশ নিতে থাইল্যান্ড যাচ্ছেন চিকিৎসক মাসুম আহমদ বন্ধুত্বর স্মৃতিতে ছাদ উদ্দিন মসনদ ও হাজতের বাস্তবতা: আতাউর রহমান

একজন আলোর বাহক: আব্দুদ দাইয়ানের গল্প

আতাউর রহমান | শিক্ষাবিদ, কলামিস্ট ও সমাজচিন্তক
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

আতাউর রহমান :

Π জন্ম ও পারিবারিক পটভূমি:
মো. আব্দুদ দাইয়ান ১৯৬৫ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের দেউল গ্রামে। তাঁর পিতা হাজী আছদ্দর আলী ছিলেন একজন সম্মানিত শিক্ষক এবং পরবর্তীতে চারখাই ইউনিয়ন পরিষদের সফল চেয়ারম্যান হিসেবে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর মা মেহেরুন নেছা ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিণী। আব্দুদ দাইয়ান ১৯৯৪ সালে রুকশানা আক্তারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর শ্বশুর আবদুস শহিদ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন।

Π শিক্ষাজীবন:

প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন দেউলগ্রাম-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর কুড়ারবাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং ১৯৮২ সালে এইচএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ থেকে ১৯৮৫ সালে বিকম (ব্যাচেলর অব কমার্স) ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯১ সালে কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এই প্রশিক্ষণকালীন সময়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সহকারী কক্ষ সম্পাদক পদে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন।

Π পেশাগত জীবন ও শিক্ষকতা:

শিক্ষকতা শুরু হয় ১৯৮৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, আর সমাপ্তি ঘটে ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি।
এই দীর্ঘ ৩৭ বছরের পথচলায় তিনি সহকারী শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সর্বশেষে প্রধান শিক্ষক পদে আসীন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এ পথচলার মাত্র সাত মাস ছিলেন কানাইঘাটের মানিকগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে; বাকি সময় অতিবাহিত করেন বিয়ানীবাজারের জমশেদ আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়ে।

একসময় ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে স্টেশন মাস্টার পদে চাকরি পেয়েও শিক্ষার প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকে মাত্র দুই মাস পর তা ত্যাগ করে পুনরায় শিক্ষকতায় ফিরে আসেন।

Π শিক্ষক রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা:
প্রথম থেকেই শিক্ষক মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষক আন্দোলনে সক্রিয় হন। ১৯৯৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিয়ানীবাজার উপজেলা শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সিলেট জেলা শিক্ষক সমিতির যুগ্মসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং সিলেট জেলার সর্বত্র শিক্ষক সমাজের মধ্যে পরিচিত হয়ে ওঠেন। অবশেষে নিজ উপজেলার শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ সম্মেলনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন।

Π বিদ্যালয় উন্নয়নে অবদান:

প্রধান শিক্ষক হিসেবে ২০১৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্ব উন্নয়নে অবদান রাখেন। বিদেশে অবস্থানরত প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়ের জন্য ২০ শতক জমি ক্রয় করেন, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ভরাট করেন এবং ট্রান্সমিটার স্থাপনসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেন। লাইব্রেরি সমৃদ্ধ করেন, শিক্ষক মিলনায়তন গড়ে তোলেন, আসবাবপত্র, আলমারি, বুকশেলফের ব্যবস্থা করেন। বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি জরাজীর্ণ কিন্ডারগার্টেন ভবনের স্থলে একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের সম্পূর্ণ আর্থিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

Π সামাজিক দায়িত্ব ও ট্রাস্ট সংশ্লিষ্টতা :

চারখাই ও দেউল গ্রামের সামাজিক উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। আর্থিক অসুবিধার কারণে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নেন। বদরুল হক চৌধুরী কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব সোহেল আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ট্রাস্টকে পুনরায় সচল করেন এবং বর্তমানে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন। এরি মাধ্যমে জমশেদ আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়, চারখাই উচ্চ বিদ্যালয়, বাগবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, ফারহানা হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় এবং রহমতাবাদ আলিম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়মিত বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।

তাঁর উৎসাহে আরও দু’জন শিক্ষার্থী তাঁদের পিতার নামে শিক্ষা-সহায়ক ট্রাস্ট গঠন করেন—

★ মনির উদ্দিন তাপাদার মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন (সুলতান তাপাদার)

★ আব্দুল আহাদ লনি মিয়া শিক্ষা ট্রাস্ট (মাসুদ আহমদ)

Π সম্পর্ক ও বিদায় অনুষ্ঠান
মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন, পুরনো সহপাঠীদের খুঁজে বের করা এবং সামাজিক বন্ধন গড়ে তোলা ছিল তাঁর প্রিয় কাজ।

চাকরি জীবনের শেষ দিনে একটি প্রাণবন্ত, বর্ণাঢ্য ও হৃদয়গ্রাহী বিদায় অনুষ্ঠানে প্রবাসী, সহকর্মী, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সহপাঠীদের উপস্থিতি তাঁকে ভালোবাসায় সিক্ত করে তোলে।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট