
পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিয়ানীবাজার উপজেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযান অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ–২ জোরদার করা হয়েছে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার মুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তুতিউর রহমান (৬৫)-কে উপজেলার কোনাগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। ইতিপূর্বে ১৬ ডিসেম্বর পরিচালিত অভিযানে বিয়ানীবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আব্দুল বাছিত-কে পৌরসভার খাসড়ীপাড়া গ্রাম থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি সুনির্দিষ্ট হত্যা মামলা রয়েছে এবং এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার রাতে পৃথক অভিযানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিয়ানীবাজার পৌর কমিটির সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম সাকেল (৩২) সহ আরও দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়। সাকেলের বিরুদ্ধে ৫ আগস্ট পরবর্তী একটি হত্যা মামলাসহ বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত অপর দুইজন হলেন চারখাই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল আহমদ (৪৫) এবং কুড়ারবাজার এলাকার আলী আহমদ (৫০)। এসব মামলার বাদী দুবাগ এলাকার তাজিম চৌধুরী, যিনি ৫ আগস্টের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। গ্রেফতারকৃত সবাইকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ওমর ফারুক জানান, তার যোগদানের পর থেকেই অভিযানের কৌশল ও তৎপরতায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নিয়মিত মামলার আসামিদের পাশাপাশি নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্দেহভাজন ব্যক্তিদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। একই সঙ্গে অনিবন্ধিত মোটরসাইকেল জব্দ, জরিমানা আদায় এবং মাদকবিরোধী কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, সরকার পতনের পর বিয়ানীবাজারে আওয়ামী লীগের এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাতসহ অন্তত এক হাজার নেতাকর্মী মামলার আসামি হয়েছেন। এছাড়া গত ১৬ বছরে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া একাধিক পুরনো মামলাও নতুন করে যাচাই করা হচ্ছে।
ওসি মো. ওমর ফারুক বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তারা জেনেবুঝেই আত্মগোপনে রয়েছেন। পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে। অপরাধী যেই হোক, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”