
পঞ্চখণ্ড আই প্রতিবেদক:
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে টিকিট নিয়ে চলছে গোপন এক কালোবাজারি সিন্ডিকেট। অনলাইন টিকিট খোলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেগুলো উধাও—কিন্তু পরে সেগুলোই বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুণ দামে। এই অনিয়মের শিকড় খুঁজতে র্যাব-৯ শুরু করেছে বিশেষ অভিযান, যার কেন্দ্রবিন্দু এখন সিলেট স্টেশন।
র্যাবের অভিযান শুরু হয় শুক্রবার। শনিবার ভোরে আবারও ঘিরে ফেলা হয় পুরো স্টেশন এলাকা। মূল গেট থেকে শুরু করে পেছনের প্রবেশপথ পর্যন্ত ছিল কঠোর নজরদারি। যাত্রীদের টিকিট ও এনআইডি যাচাই করা হয়, অনিয়ম ধরা পড়লে তাৎক্ষণিক জরিমানা। র্যাবের হিসাব বলছে, প্রথম দিনেই পাহাড়িকা, পারাবত ও উদয়ন এক্সপ্রেসে বিভিন্ন অনিয়মে ২৫ জন যাত্রীকে মোট ১৫,০০০ টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযানে দেখা যায়—কালোবাজারিরা অনলাইন থেকে টিকিট সংগ্রহ করে সাধারণ যাত্রীদের কাছে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করছে। কিছু যাত্রী সেই টিকিট নিয়ে পেছনের গেট দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলেও র্যাবের নজরদারিতে ধরা পড়েন। রেলকর্মী বা রেল পুলিশের একটি অংশের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততা নিয়েও শুরু হয়েছে অনুসন্ধান।
র্যাব-৯ জানায়, এ অভিযান কেবল টিকিট বেচাকেনার অনিয়ম ঠেকানো নয়; বরং রেল পরিবহনে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা, যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অবৈধ চক্র ভেঙে দেওয়া তাদের মূল লক্ষ্য। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় র্যাবের এই তৎপরতা এখন সিলেটবাসীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
যাত্রীরা বলছেন, টিকিট পেতে হিমশিম খাওয়ার দিন শেষ হোক—তারা চান স্থায়ী সমাধান। র্যাবের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে, সরকারি প্ল্যাটফর্ম ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে টিকিট না কেনার জন্য এবং সন্দেহজনক বিক্রির তথ্য দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে এখনো অভিযান চলছে। অনিয়মের অন্ধকার থেকে রেল ব্যবস্থাকে মুক্ত করতে র্যাবের এ পদক্ষেপ যে একটি নজির, তা বলাই যায়—তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে, এই অভিযান কতটা স্থায়ী পরিবর্তন আনতে পারবে?