পঞ্চখণ্ড আই পোর্টাল প্রতিবেদন:
১২ বছরের এক শিশু ধর্ষণের ঘটনায় সিলেটের বিয়ানীবাজার কালীবাড়ি বাজারে নেমে আসে উত্তেজনার ঝড়। ১৭ সেপ্টেম্বর বিষয়টি জানাজানি হতেই স্থানীয় জনতা বাজারে জমায়েত হয়ে অভিযুক্ত নবদ্বীপ বৈদ্য ওরফে সন্দীপের দোকান ‘বাবু টেইলার্স’ বন্ধ করে দেয়। মার্কেটের মালিক সেলিম উদ্দিনের সম্মতিতেই উচ্ছেদ করা হয় দোকানটি।
এ ঘটনার সূত্রপাত ১২ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার। অভিযোগ অনুযায়ী, কালীবাড়ি এলাকার সংখ্যালঘু হিন্দু পুরোহিত সন্দীপ পাল ১২ বছরের মুসলিম শিশু ফাহমিদা আক্তারকে ধর্ষণ করে। খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক মাধ্যমে ও স্থানীয় মহলে ক্ষোভের ঝড় ওঠে। “সংখ্যালঘু হিন্দু” পরিচয়ের আড়ালে অভিযুক্ত কি বিচার এড়িয়ে যাবে—এই প্রশ্নও তোলেন অনেকে।
ঘটনার পর থেকে বাজার ও আশেপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিযোগ উঠেছে, কেউ কেউ ভুক্তভোগীর পরিবারকে চাপ দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেছে। যদিও পুলিশ প্রশাসন অবহিত আছে, তবুও এখন পর্যন্ত দ্রুত কোনো বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান নয়।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, এই ধরনের ঘটনায় শুধু অপরাধীকে শাস্তি দিলেই হবে না, বরং সামাজিক সচেতনতা এবং প্রশাসনিক দৃঢ়তাও জরুরি। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় নেতৃত্ব এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী—সবাইকে সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।
আইনজীবীরা বলছেন, ধর্ষণ একটি নৃশংস অপরাধ; এতে ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় বা পরিচয়ের কোনো ব্যতিক্রম নেই। যে-ই অপরাধী হোক, আইনের চোখে সবাই সমান। দ্রুত বিচার না হলে এ ধরনের অপরাধ বারবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয়রা বলছেন, “আমাদের সমাজে শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি না হলে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটবে। অপরাধীর বিচার হতেই হবে, সে যে-সম্প্রদায়েরই হোক।”
এই ভয়াবহ ঘটনার পর এখন প্রশ্ন একটাই—আমরা কি সত্যিই শিশুদের জন্য নিরাপদ সমাজ গড়ে তুলতে পারছি? নাকি প্রতিবারের মতো আবারো অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলে পার পেয়ে যাবে?