পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক :
বাংলাদেশের আর্থিক খাতে নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে একটি বড় সিদ্ধান্ত। দেশের পাঁচটি আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যাংককে একীভূত করে গঠন করা হবে একটি নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক—‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক বোর্ড সভায় গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করে নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে। এর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক শিগগিরই লাইসেন্স ইস্যু করবে।
একীভূত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিটি ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ সদস্যের প্রশাসক টিম নিয়োগ দেওয়া হবে। তারা ব্যাংকগুলোর সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করবেন। প্রশাসকরা দায়িত্ব নেওয়ার পর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়বে। যদিও এমডি ও পরিচালকরা আপাতত বহাল থাকবেন, একীভূত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তাদের পদও বিলুপ্ত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, জটিল এই প্রক্রিয়া শেষ হতে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগতে পারে। তবে এ সময়ের মধ্যে আমানতকারীদের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সুরক্ষিত রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচটি ব্যাংকের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল ইসলামী এবং ইউনিয়ন ব্যাংক একীভূত হওয়ার পক্ষে মত দেয়। অন্যদিকে, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে।
সরকার ইতিমধ্যে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা মূলধন বরাদ্দ দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও ২০ হাজার কোটি টাকা সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপকে বিশেষজ্ঞরা দেশের ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানো এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি হ্রাসের একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন।