সীমান্ত সুরক্ষা শুধু একটি দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার বিষয় নয়, বরং এটি একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, বৈধ বাণিজ্যিক প্রবাহ ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার অন্যতম ভিত্তি। সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় সম্প্রতি বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের পরিচালিত একাধিক সফল অভিযানে প্রায় ১ কোটি ১১ লক্ষ ৪ হাজার ২৫০ টাকার ভারতীয় চোরাচালানি পণ্য জব্দের সংবাদ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও উদ্বেগজনক—দুটি বাস্তবতাকেই সামনে নিয়ে আসে।
সোনারহাট, পান্থুমাই, তামাবিল, শ্রীপুর, বিছনাকান্দি, বাংলাবাজার, লাফার্জ ও কালাসাদেক সীমান্ত ফাঁড়ির আওতায় চালানো এ অভিযানে শাড়ি, কারেন্ট জাল, রসুন, সুপারি, গরু, টমেটো, বাঁধাকপি, নাশপাতি, এমনকি মদ ও বিয়ার পর্যন্ত জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারকালে রসুন ও শিং মাছ জব্দ করাও বিজিবির তৎপরতার গুরুত্বপূর্ণ দিক।
এ বাস্তবতা আমাদের কয়েকটি জরুরি প্রশ্নের সামনে দাঁড় করায়—এই পণ্যগুলো সীমান্ত অতিক্রম করতে পারছে কিভাবে? কারা এই চক্রে জড়িত? কীভাবে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কিছু মানুষ জীবন জীবিকার দোহাই দিয়ে চোরাচালানের উৎসাহ ও সুবিধাভোগী হয়ে উঠছে?
এই পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. নাজমুল হকের বক্তব্য আশ্বাসবহ—“সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।” তবে শুধু অভিযান নয়, চোরাচালান প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি। স্থানীয় প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংবাদমাধ্যম এবং সচেতন নাগরিক সমাজকে একযোগে কাজ করতে হবে।
এছাড়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলের যুবকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো, শিক্ষা-সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। কারণ চোরাচালান একদিকে যেমন বৈধ বাজারব্যবস্থাকে ধ্বংস করে, অন্যদিকে এটি রাষ্ট্রীয় রাজস্ব ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে।
আমরা পঞ্চখণ্ড আই পোর্টালের পক্ষ থেকে বিজিবির এই প্রশংসনীয় উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই এবং আশা করি—সীমান্তে এই ধরণের নজরদারি ও আইন প্রয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে, যাতে করে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ও সুশাসন সুদৃঢ় হয়।
—
✍️ সম্পাদক
পঞ্চখণ্ড আই পোর্টাল