নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ জুলাই ২০২৫
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হলো জামায়াতে ইসলামীর বিশাল জাতীয় সমাবেশ, যা রূপ নেয় এক বিশাল জনসমুদ্রে। সমাবেশে সাত দফা দাবি তুলে ধরে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “ক্ষমতায় গেলে আমরা মালিক হব না, হব জনগণের সেবক। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই হবে আমাদের পরবর্তী যুদ্ধ।”
Π সাত দফা দাবিতে জাতীয় সমাবেশ
জামায়াত তাদের দাবিতে উল্লেখ করে—
১. সব গণহত্যার বিচার,
২. মৌলিক সংস্কার,
৩. ‘জুলাই সনদ’ ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়ন,
৪. জুলাই শহীদ পরিবার পুনর্বাসন,
৫. সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন,
৬. প্রবাসীদের ভোটাধিকারের ব্যবস্থা,
৭. নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ।
শুক্রবার রাত থেকেই বাস, ট্রেন, লঞ্চে করে রাজধানীতে জমায়েত হন জামায়াত, ছাত্রশিবির ও অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা। সমাবেশ ছড়িয়ে পড়ে শাহবাগ, পল্টন, প্রেসক্লাব, চানখাঁরপুলসহ আশপাশ এলাকায়।
Π সমাবেশে বিভিন্ন দলের সংহতি
এই সমাবেশে জামায়াতের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন আখতার হোসেন (এনসিপি), নুরুল হক নুর (গণঅধিকার পরিষদ), অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ (ইসলামী আন্দোলন), মাওলানা ইউসুফ আশরাফ (খেলাফত মজলিস), ড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক (জাতীয় হিন্দু মহাজোট) প্রমুখ।
আবেগঘন মুহূর্তে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বক্তব্যরত অবস্থায় মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখানেই বসে থেকে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।
তিনি বলেন, “আমরা দল নয়, জাতির প্রতিনিধি হয়ে কথা বলছি। জনগণের রায় নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। কোনো নেতা দুর্নীতিতে জড়াবে না—এই অঙ্গীকার করছি।”
Π শহীদ পরিবারের কণ্ঠে ক্ষোভ
জুলাই আন্দোলনের শহীদ ইমাম হাসান তামিমের ভাই, আহত যোদ্ধারা ও শহীদ আবরার ফাহাদের পিতা বরকতউল্লাহ উপস্থিত থেকে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন, অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দিন সরকার, ড. ফয়জুল হক ও আন্তর্জাতিক বক্তা মাওলানা মওদুদ হাসান।
Π ঘোষণা: জুলাইয়ের মধ্যে দাবি না মানলে…
নুরুল হক নুর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জুলাইয়ের মধ্যে সরকার যদি দাবি না মানে, তবে আমরাই এখানে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করব।”
এই জাতীয় সমাবেশ শুধু একটি রাজনৈতিক দলের শক্তি প্রদর্শন নয়, বরং বর্তমান সময়ের ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি ও রাজনীতিতে বৈষম্যবিরোধী জনচেতনার প্রকাশ হিসেবেও ব্যাখ্যা করছেন বিশ্লেষকরা।