1. news@panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই : পঞ্চখণ্ড আই
  2. info@www.panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই :
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পালিত হবে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) অবসরের ছয় মাসের মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবসরভাতা প্রদানের নির্দেশ : হাইকোর্টের রায় প্রকাশ বিয়ানীবাজারে পানি উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ, ভাঙ্গন রোধে ব্যর্থতা কানাইঘাট সীমান্তে গুলিতে নিহত আবদুর রহমানের লাশ চারদিন পর ফেরত দিল বিএসএফ চাঁদামুক্ত বাংলাদেশই মুক্তির পথ আইনজীবী ই. ইউ. শহিদুল ইসলাম শাহিনের যুক্তরাষ্ট্র গমন উপলক্ষে বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতির সংবর্ধনা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহপ্রধান নিয়োগে এনটিআরসিএ সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে — ৩ সেপ্টেম্বর গুরুত্বপূর্ণ সভা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ হিসেবে নিয়োগ পেলেন মো. সাব্বির ফয়েজ ডাকসু নির্বাচন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার : হাইকোর্টের আদেশ খারিজ করলেন চেম্বার জজ আদালত বেসরকারি স্কুল–কলেজের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা সংশোধন: সভাপতির স্নাতক ডিগ্রি বাধ্যতামূলক

শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সংগঠনের এক নির্ভীক কারিগর আলোকপ্রদীপ কবির খান

আতাউর রহমান
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

✍ মো. আতাউর রহমান

মো. কবির খান — একজন প্রতিভাধর সংগঠক, শিক্ষাচিন্তায় নিবেদিত প্রাণ, সংস্কৃতিমনা শিক্ষাবিদ, যিনি সিলেটের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রেখেছেন এক প্রশংসনীয় স্বাক্ষর। শিক্ষা, সৃজন ও সেবার সমন্বয়ে গঠিত তাঁর কর্মপথ অনুপ্রেরণা জোগায় আগামীর প্রজন্মকে। আলোকপ্রদীপের মতো তিনি নিজে জ্বলে অন্যকে জ্বালিয়েছেন, তেমনি ছিলেন কোমল হৃদয়ের মমতাবোধে পূর্ণ এক মানবতাবাদী মানুষ।

★প্রারম্ভিক জীবন:
১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের কালাইউরা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মো. কবির খান। পিতা মো. ফৈয়াজ খান ও মাতা আনোয়ারা বেগমের জ্যেষ্ঠ সন্তান তিনি। আট ভাইবোনের মধ্যে পরিবারের দায়িত্বশীল রূপে তিনি ছোটবেলা থেকেই হয়ে ওঠেন দৃঢ়চেতা ও বিচক্ষণ। বর্তমানে তিনি জলঢুপ (কমলা বাড়ি) এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।

★শিক্ষা জীবন:
প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি জলঢুপ সরকারি প্রাইমারি স্কুলে। ট্যালেন্টপুল বৃত্তি নিয়ে ভর্তি হন জলঢুপ হাই স্কুলে এবং জুনিয়র বৃত্তি সহ ১৯৮০ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর বিয়ানীবাজার কলেজে ইন্টারমিডিয়েট এবং সিলেট এমসি কলেজ থেকে ১৯৮৪ সালে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। অতঃপর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএসসি (গণিত) প্রিলিমিনারিতে ভর্তি হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধের কারণে চট্টগ্রাম টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ১৯৮৬ সালে বিএড সম্পন্ন করেন। ১৯৯৯ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ এবং ২০০৬ সালে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএড ডিগ্রি অর্জন করেন।

★কর্মজীবনের ইতিবৃত্ত:
শিক্ষকতার সূচনা ১৯৮৪ সালে, জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে গণিত শিক্ষকের প্রশিক্ষণকালীন একটি শূন্যতা পূরণ করতে গিয়ে। এরপর ডাক বিভাগ ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের চাকরি করেও শিক্ষকতার টানে আবার ফিরে আসেন নিজ পেশায়। ১৯৮৭ সালে জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন শিক্ষকতা শুরু করেন।

১৯৯১ সালে যোগ দেন সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ, জৈন্তাপুর, এবং অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ২০১২ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং ২০১৯ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়ে দায়িত্ব পালন করেন নিজ কর্মস্থলে। পরিশেষে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন এবং ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন।

★সংগঠন ও অবদানের পরিসর:
শিক্ষকতার পাশাপাশি সংগঠন গঠনে তাঁর দক্ষতা প্রশংসনীয়। তিনি নিউজিল্যান্ড, লন্ডন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান শিক্ষা ব্যবস্থার উৎকর্ষ সাধনে। সরকারি উদ্যোগে থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, আবুধাবি সফরের অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

তিনি বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সিলেট অঞ্চলের দুইবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে সভাপতি। নিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা সেবামূলক সংগঠন ‘হাজী নিমার আলী খান ও হাওয়ারুন নেছা শিক্ষা ফাউন্ডেশন’-এর কো-চেয়ারম্যান হিসেবে শিক্ষা বিস্তারে অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন।

★ব্যক্তিজীবন ও জীবনদর্শন:
কঠিন জীবনসংগ্রামে শিখেছেন কীভাবে প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করতে হয়। নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে পিতার কারাবরণ ছিল তাঁর জীবনের বাঁকবদলের সময়। পরিবারকে আগলে রেখে তিনি হয়ে ওঠেন জীবনজয়ের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর বিশ্বাস—জীবনকে চিনতে ঐশ্বর্যের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন মমত্ববোধ ও মহত্ত্বের।

সদালাপী, সাহসী ও দূরদর্শী এই মানুষটি একজন বিদুষী রমণী নিয়ে দাম্পত্যজীবন শুরু করেন। তাঁর সহধর্মিণী কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নয়াসড়ক এর একজন সিনিয়র শিক্ষিকা। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যার জনক। শিক্ষা ও সংসার—উভয় ক্ষেত্রে তিনি একজন দায়িত্বশীল কাণ্ডারি।

★উপসংহার:
মো. কবির খান শুধু একজন শিক্ষক নন, তিনি এক সময়ের শ্রেষ্ঠত্বের বাহক। তাঁর নিরবিচার ও নিবেদিত প্রচেষ্টা ভবিষ্যৎ শিক্ষানুরাগীদের পথ দেখাবে। তাঁর জীবন ও কর্ম আমাদের জন্য এক প্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে।

✍ লেখক পরিচিতি:শিক্ষাবিদ, কলামিস্ট ও সমাজচিন্তক ও ‘পঞ্চখণ্ডের পথ ও পথিকৃৎ’ গ্রন্থের লেখক।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট