আতাউর রহমান :
১৯৭৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বর বন্ধনে আবদ্ধ আছি আমার বিদ্যালয়ের সহপাঠী ও অন্তরঙ্গ বন্ধু ছাদ উদ্দিন। জীবনের পথচলায় অনেক কিছুই এসেছে ও গেছে, কিন্তু বন্ধুত্বর এই বন্ধন অম্লান ও অটুট থেকেছে অদ্যাবধি।
আজ সকালে ফেসবুক খোলেই বন্ধু আব্দুদ দাইয়ান এর স্টেটাস দেখলাম, আমাদের বাল্যবন্ধু ছাদ উদ্দিন প্রবাসে যাচ্ছে। বলা নেই, কওয়া নেই। তার ররকম যাওয়া আসা দেখে বলা মুশকিল- বন্ধুটি কি আসলে স্বদেশি না-কি প্রবাসী। এ যেন তার ভ্রমণের অন্যতম শখ।
ছাদ উদ্দিন অল্প বয়স থেকেই ঘরকুনো হননি। ঘর ও গ্রামকে ভালোবাসেন বলেই ঘর ছেড়ে দূর দেশে পাড়ি দিয়েও ঘন ঘন আবার জন্মস্থানে ফিরে এসেছেন। ঘর ও মাটির টানে তিনি বারবার ঘর মুখো হন, কারণ আত্মা যে শেকড়ে গেঁথে থাকে।
১৯৮৪ সালে সিলেট এম.সি. কলেজ হতে বি.এস-সি পাস করার পর তিনি ব্যবসায় জীবন শুরু করেছিলেন। শুরু করেছিলেন ট্রেভেলিং ব্যবসা, যে ব্যবসায় তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে অল্প দিনেই বিশেষ খ্যাতিতে পৌঁছান। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি হন অল্প কয়েকজন স্বনামধন্য ও বিশ্বাসযোগ্য ব্যবসায়ীর একজন।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ঘর বাঁধলেও তিনি জন্মস্থল ও আত্মীয়-বন্ধুজনকে ভুলেননি। পরিবারের সাথে স্থায়ীভাবে প্রবাসে থাকার পরও ঘন ঘন দেশে আসেন, আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবকে কাছে পেতে।
ছাদ উদ্দিন অপরের বিপদে ও কল্যানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন সব সময়। বন্ধু ও আত্মীয়রা চাইলে যে কারো সমস্যা সমাধানে তিনি এগিয়ে আসতেন। আড্ডাপ্রিয় ও বন্ধুবৎসল এই মানুষটি ঘরোয়া পরিক্রমাকে মাতিয়ে রাখতেন তাঁর অনন্য স্মৃতিচারণ ও সরল আচরণের মাধ্যমে।
বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতিতে তাঁর অপরিসীম ভালোবাসা ও অবদান অমৃতসমান। সমিতিকে সুদৃঢ় ও স্থায়ী করার পেছনেও ছিল তাঁর অপরিহার্য ভূমিকা।
ছাদ উদ্দিন দুই পুত্র ও এক কন্যার গর্বিত পিতা। তাঁর সন্তানরা সবাই সিলেট আনন্দ নিকেতন থেকে কৃতিত্বের সাথে পড়াশোনা সম্পন্ন করে যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় পাড়ি দিয়েছে। তাঁর দ্বিতীয় পুত্র স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন, অপর পুত্র ও একমাত্র কন্যা পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে আছেন।
আজ (১৬ জুন) আবার তিনি পরিবারের টানে ও জীবিকার প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে পাড়ি জমালেন। আল্লাহ তাঁকে নিরাপদ ও সুন্দর যাত্রাদান করুন। পরিবারের সবাইকে সমৃদ্ধিতে ঘর পূর্ণ হোক, বন্ধুত্বর বন্ধন অটুট ও অমৃতসমান হোক— এই দোয়াই করি।