পঞ্চখণ্ড আই ডেস্ক : নামাজ পড়া, গাছ লাগানো, সুরা মুখস্থ ও রাসূল (স.)-এর জীবনী পাঠসহ ব্যতিক্রমী কিছু শর্তে এক আসামিকে জামিন দিয়েছেন সিলেটের আদালত। এসব শর্ত পালন সাপেক্ষে জামিন পেয়ে খুশি প্রকাশ করেছেন আসামি নিজেও।
সোমবার (৫ মে) সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪র্থ আদালতের বিচারক এমন মানবিক ও সংশোধনমুখী নির্দেশনা দেন। আসামি সাদ্দাম হোসেন (২৫) ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কিসমত রসুলপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সুপাতলা গ্রামে বসবাস করেন।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী, আসামিকে আগামী এক বছরের জন্য নির্ধারিত শর্তাবলি পালন করতে হবে। জামিনে মুক্তির শর্ত হিসেবে তাকে—
Π ৫০টি গাছ লাগিয়ে নিয়মিত তার যত্ন নিতে হবে;
Π নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে এবং প্রতি শুক্রবার মসজিদে গিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় অংশ নিতে হবে;
Π আমপারার ১০টি সুরা অর্থসহ মুখস্থ করতে হবে;
Π রাসূল (স.)-এর জীবনী পাঠ করতে হবে, না পারলে অন্যের মাধ্যমে শুনে জানতে হবে।
এসব শর্ত লিখিতভাবে বন্ড আকারে তৈরি করে আসামির স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। বন্ড সম্পাদনকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন দিলু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শুধু তাই নয়, শর্তে আরও উল্লেখ রয়েছে যে আসামিকে:
Π প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে এবং নির্দেশনা মানতে হবে;
Π এই সময়কালে কোনো অপরাধে জড়ানো যাবে না, মাদক সেবন বা বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ;
Π পেশা বা বাসস্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হবে;
Π পরিবারের সদস্যদের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে এবং পারিবারিক বন্ধন বজায় রাখতে হবে।
আদালতের এমন ব্যতিক্রমী আদেশে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, “খারাপ বন্ধু-বান্ধবের কারণে ভুল পথে গিয়েছিলাম। আদালতের সিদ্ধান্তে আমি খুশি। এখন থেকে ভালোভাবে চলার চেষ্টা করব।”
সংশোধনের সুযোগ দিয়ে সমাজে ফিরে আসার এই সুযোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের নির্দেশনা শুধু দণ্ড নয়, বরং সংশোধনের পথও খুলে দেয়।