বিশেষ প্রতিনিধি :
সিলেটের বিয়ানীবাজারে সুরমা, কুশিয়ারা ও সোনাই নদীর ভাঙ্গনে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। নদী তীর সংরক্ষণে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃক গৃহীত প্রকল্পগুলো টেকসই ফল দিচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ, দুর্নীতি ও তদারকির অভাবে উন্নয়ন উদ্যোগগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
গত ১৫ বছরে পাউবোর বিভিন্ন প্রকল্পের নামে কয়েকশ’ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢালাই কাজে নিম্নমানের বালি, সিমেন্ট ও লোকাল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী ১:২ বা ৫:৫ অনুপাতে ঢালাই করার কথা থাকলেও সিমেন্টের পরিমাণ কম রাখা হয়েছে। ব্লক ঢালাইয়ের পর ২১ দিন ভিজিয়ে রাখার নিয়মও মানা হয়নি। নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবহৃত জিও ব্যাগ কতটুকু ফেলা হয়েছে বা সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার হয়েছে কি না, তারও কোনো নজরদারি নেই।
এছাড়া সুরমা ও কুশিয়ারা নদী খননের জন্য দুটি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও তা বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক উদ্যোগে কিছু প্রকল্প হলেও সেগুলোর টেকসই ফল নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
তবে সম্প্রতি চারখাইয়ের নয়াগ্রাম জামে মসজিদ, দুবাগের গজুকাটা বিওপি, আলীনগরের ঢাকা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামে মসজিদের ভাঙ্গন ঠেকাতে মোট ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। স্থানীয়দের আশা, এসব স্থানে আপাতত ভাঙ্গন ঝুঁকি কিছুটা কমবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সকল প্রকল্পই আমরা তদারকি করি। কোনো প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হয়। নদী ভাঙ্গন পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব নয়।”
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকল্পের নামে দুর্নীতি চলতে থাকলে নদী ভাঙ্গন রোধের উদ্যোগ কখনোই কার্যকর হবে না।